
১৬.০৫.২০২০। শনিবার
সকাল ৭.১৫
আবার পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু। এবার উত্তরপ্রদেশের সড়কে। ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩৫ জন আহত।
এটা কি পরিযায়ী শ্রমিকের মড়ক? তা তো নয়। এটা তো করোনা অতিমারী। প্যানডেমিক। কিন্তু ইদানীং রোজ সকালে টিভি খুললেই দেশের কোথাও না কোথাও পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। রেলপথে আর নয়। এবার সবই সড়কপথে। কারণ, এই পরিযায়ী শ্রমিকরা আর বোধহয় রেলপথ ধরে হাঁটছেন না। তাঁরা এবার নেমে এসেছেন সড়কে। এত ট্রেন এতদিক থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে তাঁদের নিজস্ব রাজ্যে ঢুকছে। তবু মনে হচ্ছে, শ্রমিকসমুদ্র এখনও বহমান। ঠিকই। সাগর থেকে এক ঘটি জল তুললে তার আয়তন কি কমে যায়? যে পরিমাণ পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরে এসেছেন, তাঁদের সংখ্যা যাঁরা এখনও পথে পথে ঘুরে মরছেন, তাঁদের তুলনায় নগণ্য।
লকডাউন না হলে কি আমরা এই শ্রমিকদের কথা আদৌ জানতে পারতাম? আমাদের শহুরে এবং দৈনন্দিন আপাত–ব্যস্ততার জীবনে তো এঁদের কোনও অস্তিত্বই ছিল না! এখন যেভাবে প্রত্যেকদিন তাঁরা আমাদের প্রাতরাশের টেবিল থেকে ডিনারের মেনু জুড়ে থাকেন, তাতে মনে হয় এদেশে ওঁরাই সংখ্যাগুরু। মনে হয়, লকডাউনের আকস্মিক পদাঘাতে উইয়ের ঢিবি ভেঙে গিয়েছে। আর সেই ভাঙাচোরা বসত থেকে বেরিয়ে আসছে শ’য়ে–শ’য়ে, হাজারে–হাজারে, লক্ষে–লক্ষে বল্মীক। তারা ছেয়ে ফেলছে আমাদের চারপাশ। বাইছে আমাদের গায়ে–পায়ে–মাথায়। গা ঝাড়া দিয়ে আমরা তাদের ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছি। কিন্তু তারা গা বেয়ে মুখ–মাথা হয়ে সটান ঢুকে পড়ছে আমাদের মগজে।
ছেড়ে যাচ্ছে না। বেরোচ্ছে না। বেরোবেও না কোনওদিন।
সকাল ৮.১৫
মুনমুন ফোন করেছিল। ছোটমামু আর নেই।
শুনে খানিক ঝুম হয়ে বসে রইলাম। তারপর এক এক করে সাজাতে লাগলাম— এখন কী কী করণীয়।
ছোটমামি চলে গিয়েছে অনেক বছর আগে। নিঃসন্তান ছোটমামু সল্টলেকের লাবনিতে থাকে আমাদের ছোটমাসি, পাখিমাসিকে নিয়ে। আজীবন এলআইসি–র কর্মী, একটা পা একটু টেনে চলা এবং বামপন্থী ইউনিয়ন করা ছোটমামু বহিরঙ্গে অত্যন্ত লাউড। চেঁচিয়ে ছাড়া কথা বলতে পারে না। এককালে চিমনির মতো সিগারেট খেত। প্লেন চারমিনারও খেতে দেখেছি অনর্গল। কয়েকবছর আগে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা এবং ছাড়িয়ে আনার সময় আমিই ধমকে ছাড়িয়েছিলাম। কিন্তু মা’দের পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র ছোটমামুই সকলের বাড়িতে ঘুরে ঘুরে খোঁজখবর নিত নিয়মিত। ছোটবেলায় সেটা অবাক হয়ে দেখতাম। দেখতাম, রোজ একবার করে ফোন করত। রোজ!
সেই ছোটমামু গত দেড়বছর ধরে ক্যান্সারে ভুগছে। আমি আর মুনমুনই ডাক্তার–বদ্যি করেছি। প্রথমে টাটা মেমোরিয়াল। তারপর ক্যান্সার স্পেশালিস্ট সুবীর গাঙ্গুলির কাছে। বিচক্ষণ, বাস্তববাদী এবং সুচিকিৎসক সুবীরদা তখনই বলেছিলেন, ‘বাঙালির গড়পড়তা আয়ু ৭২ থেকে ৭৬ বছর। উনি এখন ৮৫। সেটা মাথায় রেখো।’ সুবীরদার পরামর্শক্রমেই ছোটমামুকে অ্যাপোলোতে প্যালিয়েটিভ রেডিয়েশন দিতে নিয়ে গিয়েছি পরপর দশদিন। যাতে অফিসে যেতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য সকাল ৮টায় রেডিয়েশন বুক করেছি। প্রত্যেকদিন লাবনির তিনতলার ফ্ল্যাট থেকে ছোটমামুকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার ঘন্টাখানেক পর ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে নিয়মিত ব্লাড টেস্ট, ওষুধ, ওরাল কেমো।
কিন্তু পরিবারের কাউকে কিছু জানতে দেওয়া হয়নি। আমি নিজে একটা রগচটা ইমেজ রাখি। কারণ, তাতে অনেক অবাঞ্ছিত প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যায়। সকলে একটা নিরাপদ দূরত্ব রেখেই চলে। এসব ক্ষেত্রে তাতে আরও আরও সুবিধা। রইল বাকি মুনমুন। ছোটমামুর ক্ষেত্রে ওই ছিল প্রাইমারি কেয়ারগিভার। মুনমুন যা করেছে, তা অভাবনীয়। কিন্তু, ওরও মুখ আমার কথায় বন্ধ ছিল।
ছোটবেলা থেকে হাই পাওয়ারের চশমা। তারপর এই বয়সে ডানচোখের পাতায় ক্যান্সার। চোখে দেখতেই পেত না ছোটমামু। কিন্তু প্রত্যেক ভিজিটে সুবীরদার ঘরে ঢুকেই আন্দাজে হাতজোড় করে বলত, ‘নমস্কার ডাক্তারবাবু। আপনি ভাল আছেন?’ সুবীরদা ছোটমামুর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের পলিটিক্স নিয়ে আলোচনা করতেন। বলতেন, সিপিএমের কোনও চান্স নেই। ছোটমামু বিমর্ষ হতো। বেরোনর মুখে বলত, ‘আমাকে কেমন দেখলেন? একেবারে ফিট না?’
সুবীরদা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে বলতেন, ‘আমার তো গতবারের চেয়ে অনেক ফিট লাগল। আপনার কী মনে হচ্ছে? ওই কবিতাটা একবার শোনাবেন নাকি?’
ব্যস! কোনওদিন ছাত্র পড়িয়েছে, এমনকিছু মা বা অন্য কারও কাছে শুনিনি। কিন্তু ছোটমামু উদাত্ত গলা কাঁপিয়ে শুরু করত কালিদাস রায়ের ‘ছাত্রধারা’—
‘বর্ষে বর্ষে দলে দলে, আসে বিদ্যামঠতলে..।’
ছোটমামুকে একবারও বলিনি, অসুখটা কী। মেসো মানে মুনমুনের বাবা ছাড়া পরিবারেরও কাউকে বলিনি। প্রথমত প্রত্যেকেই বয়স্ক। ক্যান্সার শুনলে তখন থেকেই কান্নাকাটি পড়ে যেত। কারণ, প্রায় ৩০ বছর আগে মুনমুনের মা, খুকুমাসিও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে অকালে চলে গিয়েছিল। তার একটা এফেক্ট এখনও আছে। গোটা ফ্যামিলিতে বিষন্নতার ছায়া মোকাবিলা করা খুব কঠিন। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক পরিবারেই কিছু পাকা এবং তেঁএটে খচ্চর থাকে, যারা পারিবারিক পলিটিক্সের রাশ নিজের হাতে রাখতে এবং সেই অনুযায়ী বাকিদের নাচাতে ভালবাসে। আমাদের পরিবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তাদের থেকে তথ্যটা গোপন রাখা জরুরি ছিল। কিন্তু জানতাম, একটা ইতিমধ্যেই হেরে যাওয়া যুদ্ধ লড়ছি। শুধু লড়াইয়ের জন্যই লড়া।
টাটা মেমোরিয়ালে গেলে একটা মিশ্র অনুভূতি হতো। ডাক্তারের চেম্বারের বাইরে একটা হুইলচেয়ারে ছোটমামু বসে বসে ঝিমোত। আমি আর মুনমুন ওয়েটিং বে’তে বসে থাকতাম। দেখতাম আশেপাশে সার সার অসুস্থ মানুষ ধৈর্য ধরে বসে আছেন। কখন ভিতরে তাঁর ডাক পড়বে তার অপেক্ষায়। তাঁদের মধ্যে কিশোর–কিশোরীও আছে। কেমোথেরাপির দাপটে মাথার চুল উঠে গিয়েছে। অনেকে হুইলচেয়ার–বাউন্ড। এখন মনে পড়ছে, সেখানেই প্রথম মুখে মাস্ক পরিহিত রোগী দেখা।
প্রথম প্রথম খুব ডিপ্রেশন হতো। মনে হতো, চারদিকে মৃত্যুর গন্ধ। যে লোকগুলোকে দেখছি, তারা অনেকেই দিন গুনছে পরপারে যাওয়ার। মাথা নিচু করে ঢুকতাম। মাথা নিচু করে বেরোতাম। যাতে কোনওদিকে নজর না যায়। কিন্তু দেখতে দেখতে সেই দৃষ্টিটাই কেমন বদলে গেল। মানুষগুলোকে ক্রমশ লড়ুয়ে মনে হতে লাগল। মনে হতে লাগল, এরা সকলেই একটা অসম যুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু হাল ছাড়ছে না। কী অদম্য যোদ্ধা! কী অসম্ভব ফাইটিং স্পিরিট!
ছোটমামু গত কয়েকদিন ধরেই ভাল নেই বলে শুনছিলাম। যাব যাব করেও যাওয়া হয়নি। জানতাম, কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। জানতাম না, কবে শেষ হবে। আজ একটু আগে জানলাম। সব শেষ।
সকাল ৮.৪০
মুনমুনকে বললাম, পিকনিক গার্ডেনের বাড়ি থেকে ওকে তুলে লাবনিতে যাব। তার আগে ফুল, ধুপকাঠি এবং সাদা থান কাপড় কিনব। ছোটমামুর আধার কার্ড খুঁজতে হবে। কারণ অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, শ্মশানে মৃতের আধার কার্ড দরকার হয়।
যে কোনও মৃত্যুতে পরিকাঠামোগত কয়েকটা জিনিস প্রথমেই যোগাড় করে ফেলতে হয়।
১. ডেথ সার্টিফিকেট।
২. শববাহী গাড়ি।
৩. শ্মশানে দাহ করার বন্দোবস্ত।
লাবনিতে ফোন করে জানা গেল, কাছাকাছির অন্তত তিনজন ডাক্তার ডেথ সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করেছেন। বাড়ি থেকে তুলে আনা এবং ফিরিয়ে দেওয়া হলেও নয়। বলেছেন, নার্সিংহোমে নিয়ে যেতে। এঁদের জন্যই ডাক্তারদের বদনাম হয় আর ভাল চিকিৎসকরাও ক্যালানি খান। অগত্যা ফোন করলাম কার্তিকদাকে। একসময় দীর্ঘদিন ছোটমামুর চিকিৎসা করেছিল। ছোটমামু শেষবার হসপিটালাইজ্ডও হয়েছিল কার্তিকদার আন্ডারেই।
চণ্ডীগড় এবং বিলেতে পড়াশোনা করা কার্তিকদার মধ্যে মনুষ্যত্ব এবং দায়িত্ববোধের অভাব কখনও ছিল না। বলতেই রাজি হয়ে গেল। বললাম, তোমায় আমি তুলে নিয়ে আসছি। কার্তিকদা বলল, ‘তোলার কী আছে? আমার গাড়িই তো আছে। আমি হসপিটালে যাওয়ার আগে ঘুরে যাব।’
বিধাননগরের মেয়র পারিষদ দেবাশিসদাকে অনুরোধ করার পর বললেন, গাড়ি পাওয়া যাবে। কোনও অসুবিধা নেই। তাঁকে যেন শুধু সময়টা জানিয়ে দিই।
শ্মশানের ব্যাপারে আমার ‘গো টু পার্সন’ বরাবর একজনই থেকেছেন। সবসময় সাহায্য করেছেন। কিন্তু মালাদি বললেন, আজ কেওড়াতলা শ্মশান বিকেল ৪টে পর্যন্ত বন্ধ। কারণ, আজ মাসের ১৬ তারিখ। প্রতিমাসের ১৬ তারিখেই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেওড়াতলা শ্মশান সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বন্ধ থাকে। মালাদি বললেন, ‘গড়িয়া শ্মশানে নিয়ে যাও। আমি বলে দিচ্ছি। কোনও অসুবিধা হবে না।’
সকাল ৯.০৫
এবার বেরিয়ে পড়ি। অনেক কাজ। প্রত্যেকটা ধাপ ঠিকঠাক সময় অনুযায়ী হলে যা বুঝতে পারছি, বিকেলের মধ্যে মুনমুনকে আবার বাড়িতে ড্রপ করে দিতে পারব।
বিকেল ৫.০৫
এতক্ষণে সব মিটল। এতক্ষণে একটু বসতে পারলাম। সব ঠিক ছিল। গোলপার্কে ফুল আর ধুপকাঠি পাওয়া গিয়েছিল তবে থান কাপড় কোথাও পেলাম না। বাড়ির পরিষ্কার চাদর ঢাকা দিয়েই ছোটমামুকে বিদায় দিতে হল। কার্তিকদা বাড়ি এসে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে গিয়েছিল। দেবাশিসদা ঠিক সময়ে গাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। যদিও গাড়ির সঙ্গে একটি পিশাচ এসেছিল। কাজ করার আগেই যে এই লকডাউনের বাজারে ‘পারিশ্রমিক’ (প্রকারান্তরে বাড়তি টাকা বা বিনা অপরাধের ঘুষ) দাবি করে বসল। তাকে কিঞ্চিৎ ওরাল অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হল। তাতেও কাজ না হলে আইভি করে ওষুধ দিতে হতো। অশোক নামের পিশাচ সর্বসমক্ষে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় ব্যাপারটা ততদূর যায়নি।
গড়িয়া শ্মশান এমনিতেই আমার খুব পরিচ্ছন্ন লাগে। শান্তও। কোনও অত্যাচার নেই। পুজো করুন–পুজো করুন বলে পুরোহিতের ঘাড়ের উপর লাফিয়ে পড়া নেই। শবদাহকদের বাড়তি অর্থের দাবি নেই। পাশাপাশি আজ একজন পরিচ্ছন্ন মানুষেরও সঙ্গে আলাপ হল সাব রেজিস্ট্রারের অফিসে। ডাঃ রমেশ রজক। থাকেন গার্ডেনরিচে। লকডাউনের বাজারে ২২ কিলোমিটার মোটরসাইকেল চালিয়ে ডিউটিতে আসেন। টানা আড়াইদিন ডিউটি করেন এবং বাড়ি ফেরেন। কিন্তু মুখের হাসিটি অমলিন রাখেন। ভিআইপি ব্যতিরেকে তীব্র গরমে অতিথিদের পানীয় জলের বোতলটি এগিয়ে দেন। পাখার তলায় বসান।
ডাঃ রজক বলছিলেন, আজ সকাল থেকে মাত্রই ৮–১০ টা বডি এসেছে। অন্যান্যদিন এর চেয়ে অনেক বেশি আসে। তিনিই জানালেন, এই শ্মশান সকাল ৮টা থেকে বেলা ৪টে পর্যন্ত বন্ধ থাকে প্রতিমাসের ১৭ তারিখ।
গাড়িভাড়ার ২,০০০ টাকা ছাড়াও ৫০০ টাকা দিলাম পিশাচটাকে। গাড়ির চালককে আরও ৫০০। দু’জনেই লম্বা সেলাম করল। বলল, ‘আবার দরকার হলে বলবেন স্যার।’ রাজনীতিকরা ঠিকই করেন। মানি স্পিক্স। অ্যান্ড ওনলি মানি স্পিক্স।
ছোটমামুর অস্থি বিসর্জন দিয়ে, মুনমুনকে বাড়িতে নামিয়ে এবং শ্মশান থেকে ফেরার পথে ফোনে পরিবারের বিভিন্ন প্রান্তে খবর দিতে দিতে এলাম। মা কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘খুকু আর রথীনদা দুজন চলে গেল। এরপর আমার পালা।’
এক দাবড়ানি দিয়েছি!
রাত ৯.১৬
আজ সারাদিন বহির্জগতের সঙ্গে প্রায় যোগাযোগ ছিলই না। এখন যা যা দেখছি—
১. বাংলার আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনভাড়া রাজ্য সরকারই দিয়ে দেবে বলে রেলবোর্ডকে চিঠি লিখেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।
২. লকডাউনের মেয়াদ নাকি আরও ২ সপ্তাহ বাড়তে পারে। অর্থাৎ, মে মাসের শেষ পর্যন্ত। সেটা অবশ্য খুব অপ্রত্যাশিত নয়। খবরও নয়। এখন যেটা দেখার, চতুর্থ দফার লকডাউনে কী কী ছাড় দেওয়া হয়। সম্ভবত কাল সেই বিষয়ে গাইডলাইন প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
৩. তৃণমূলের উপস্থিতি বাদ দিয়েই শিলিগুড়িতে প্রশাসক বোর্ড নিয়োগ করল নবান্ন। গতকাল ওই বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ করেছিলেন শিলিগুড়ির বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। বলেছিলেন, ওই নির্দেশিকা মানবেন না। আজ নবান্ন থেকে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। অশোক খুশি। নির্দেশিকা মেনে নিয়েছেন।
রাত ১০.১৬
রাত নেমে গেল। দীর্ঘ একটা দিনের শেষ। অন্যরকম দিন। লকডাউনে এই অভিজ্ঞতাটাও হয়ে গেল। লাবনির বাড়িটা আরও একটু ফাঁকা হয়ে গেল। ভাবছিলাম, ভালই হল। বড্ড কষ্ট পাচ্ছিল লোকটা। ভিতরের যন্ত্রণায় মেজাজ হারাত। পাখিমাসিকে অযথা বকাবকি করত। কিন্তু কখনও বলত না, কষ্ট হচ্ছে।
খানিকক্ষণ আগে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। হয়তো মনেরই ভুল। কিন্তু অন্তরাল থেকে স্পষ্ট গমগমে গলায় ভেসে আসছিল—
ক’দিনের এই দেখা
সাগর সৈকতে রেখা
নূতন তরঙ্গে মুছে যায়
ছোট ছোট দাগ পা’র
ঘুচে যায় একাকার
নব নব পদ–তাড়নায়..
মৃত্যু নাকি মুক্তি!
সবক্ষেত্রেই
LikeLike
মুক্তি!
LikeLike