
১৩.০৫.২০২০। বুধবার
রাত ৩.৩৪
কিছুতেই ঘুম আসছে না। তাই মনে হল এন্ট্রিটা করেই রাখি।
ঘন্টাখানেক আগে হঠাৎ ফ্যান আর এসি–টা বন্ধ হয়ে গেল। ঘুম ভেঙে গেল। ভাবলাম লোডশেডিং হয়েছে। বেজায় গরম। বিছানায় এপাশ–ওপাশ করছিলাম। কখন কারেন্ট আসে। হঠাৎ দেখি, নীচে একটা কথা বলার আওয়াজ হচ্ছে। তারপর দেখি, মা ফোন করছে। ধরতেই বলল, ‘এখনই একবার নীচে আয়!’
গিয়ে দেখি, সিঁড়ির তলায় বাবা পা ছড়িয়ে বসে আছে। ঘেমেনেয়ে একসা। মা বলল, ‘মেন সুইচ অফ করে তালা খুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। আমি এতবার ডাকছি! পাত্তাই দিচ্ছে না! শুনছেই না!’ বুঝলাম, ডিমেনশিয়ার রোগী দিনরাতের হিসেব গুলিয়ে ফেলেছে। আগে গিয়ে মেন সুইচ অন করলাম। আলো–পাখা ফিরে এল। তারপর বাবাকে গিয়ে বললাম, ওঠো। অসহায় মানুষটা ক্ষীণস্বরে বলল, ‘উঠতে পারছি না।’ ধরে ধরে তুললাম। পরনের টি–শার্ট ঘামে ভিজে সপসপ করছে। আস্তে আস্তে হাতদুটো ধরে এনে বিছানায় শোওয়ালাম। ফ্যান চালিয়ে দিলাম ফুলস্পিডে। তারপর কিছুক্ষণ বসে রইলাম। ঘুমিয়ে পড়ার পর বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে মা’কে বললাম, ‘দরজা বন্ধ করে গেলাম। যদি বাইরে আসতে চায়, আমাকে ফোন করবে বা চেঁচিয়ে ডাকবে।’
উপরে উঠতে উঠতে মনে হল, স্মৃতি বিস্মৃত বৃদ্ধও কি বাকি মনুষ্য সম্প্রদায়ের মতো লকডাউনে বন্দি থাকতে থাকতে মানসিক স্থৈর্য্য হারিয়ে বসেছে? তারও মনে হচ্ছে, এই আগল ভেঙে বাইরে যেতে হবে! আর ভাল লাগছে না। সেও কি তার খাঁচার দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে যেতে চায়? তাই বেরোনর আগে মেন সুইচ অফ করে বাড়িটাকে সুরক্ষিত করে যেতে চেয়েছিল? কে জানে কোন কুয়াশায় এখন তার বসবাস। ভাগ্যিস তালা খুলে বেরিয়ে যায়নি! এই রাতে কোথায় খুঁজতাম?
তার পর থেকেই আর ঘুম আসছে না। মনে হচ্ছে, এর শেষ কোথায়? কবে ফিরবে স্বাভাবিক জীবন? এই অনন্ত সার্কাস আর কতদিন চলবে? যেখানে ডিমেনশিয়া রোগীর সঙ্গে সাধারণ মানুষের চাহিদার কোনও তফাত নেই। সুস্থতা–অসুস্থতা গুলিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকেই স্বাভাবিকতার মুখোশ পরে থাকার চেষ্টা করছে। অথচ ভিতরে ভিতরে সারা পৃথিবীর উপর চণ্ড রাগ হচ্ছে। মনে হচ্ছে, টান মেরে মুখোশ ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়ি। যা হয় হবে। কিন্তু পরমুহূর্তে হতমান হয়ে বসে পড়ছে খাঁচার ভিতর।
সকাল ৬.৫৫
বাবা একটু আগে ঘুম থেকে উঠে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল। গিয়ে খুলে দিয়ে এলাম। দেখলাম, ঠিকঠাকই আছে।
সকাল ৭.৫৫
বাবা–মা’কে চা–বিস্কুট দিয়ে এলাম। দেখলাম বাবা দিব্যি বাধ্য ছেলের মতো সোফায় বসে আছে পা তুলে। আর মা বরাবরের মতো চেঁচাচ্ছে, ‘পা নামাও! সোফা থেকে পা নামাও! কতবার বলেছি, সোফায় পা তুলে বসবে না!’ বাবা কোনও ভ্রূক্ষেপ করছে না। ভাবছিলাম, এইভাবে নরমে–গরমে এরা কতদিন কাটিয়ে দিল। ঝগড়াঝাটি, বাগ্বিতন্ডা, বিবাদ–বিসম্বাদ আর মায়া–ভালবাসা নিয়ে।
সকাল ৮.১৩
জীবনের ডায়নামিক্সটা পুরোপুরি বদলে গেল। আপসাইড ডাউন। যে জীবনে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে প্রকৃতিগত ভেদরেখাটা মুছে যাচ্ছে। যে লোকটা দিনে পঁচিশবার হাত ধুয়ে বর্ডারলাইন ওসিডি–র হওয়ার জন্য আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে দুয়ো খেত, এখন সেই আওয়াজ–দেওয়া লোকগুলোই সেদ্ধ করতে দেওয়ার আগে ভিমের গুঁড়ো দিয়ে কাঁচা ডিম ধুচ্ছে। বাজার থেকে সব্জি কিনে এনে আগে নুনজলে ডোবাচ্ছে। যে লোকটা পয় পরিষ্কার থাকার জন্য কপট গঞ্জনা শুনেছে আজীবন, এখন সেই লোকটাই পৃথিবীর রোলমডেল।
বেলা ১১.২৫
কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এইমাত্র ঘুম ভাঙল। উঠে দেখছি, টিভি বলছে বিমান চালানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কলকাতা বিমানবন্দর। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিমানযাত্রা শুরু হবে এবার। সেই মর্মে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বিমান পরিবহণ সংস্থাকে নির্দেশ পাঠিয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক।
এতদিনে নাকি কলকাতা থেকে একটিই বিশেষ বিমান উড়েছে। সাতজন জাপানি নাগরিককে নিয়ে। তাছাড়া আর কোনও বিমান এই শহরে ওঠানামা করেনি। এমনকী, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বন্দে ভারত’ মিশনেও কলকাতায় কোনও বিমান আসছে না। নির্দেশ অনুযায়ী টার্মিনালে অপেক্ষার সময় একটা করে চেয়ার ছেড়ে রেখে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে চেয়ারে বসা যাবে না, তার উপর একটা ক্রসচিহ্ন। কাউকে কেবিন ব্যাগেজ নিতে দেওয়া হবে না। চেক ইন ব্যাগেজও নাকি একটাই নেওয়া যাবে। সর্বোচ্চ ২০ কেজি। ৮০ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য বিমানে ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
শেষ নিষেধাজ্ঞাটা দেখে আবার নীচে সোফার উপর পা তুলে বসে থাকা বৃদ্ধের কথা মনে পড়ল। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে লোকে কেমন বাতিলের খাতায় চলে যায়!
বেলা ১১.৪০
শপিং মল, সিনেমাহল— এগুলো কি আর কোনওদিন খুলবে? মনে হয় না। অদূর ভবিষ্যতে কি তাদের প্রয়োজন হবে? এখন অনলাইনেও সমস্ত শৌখিন আইটেম ‘কারেন্টলি নট ডেলিভারেব্ল’ বলছে। অর্থাৎ, শৌখিন জিনিস আর অত্যাবশ্যকীয় নয়। জরুরি নয়। ফলে ডেলিভারি করা যাবে না। শুধু জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম সামগ্রীই এখন পাওয়া যাবে। সেখানেই অগ্রাধিকার থাকবে। শপিং মল বাহুল্যের তালিকায় চলে যাবে।
আজই দেখলাম ‘স্পেনসার্স’ টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছে: টি–শার্ট ইত্যাদি বরাত দিলে বাড়িতে ডেলিভারি করে দেবে। ২,৫০০ টাকার বিল হলে কিছু ডিসকাউন্টও আছে। তাহলে কি এবার আরও বড় বড় ব্র্যান্ডগুলোও বাড়িতে আসবে? ভ্যানে করে টাটকা মুরগি যেমন আসছে এখন?
সিনেমাহলগুলো কী করবে? কারণ, সিনেমা কবে আবার বানানো হবে কেউ জানে না। সামাজিক দূরত্ব মেনে কি আর শ্যুটিং হয়? ছবি যদি বানানোই না হয়, তাহলে সিনেমাহলে কী রিলিজ করবে? আর পুরোন ছবি লোকে কেন সিনেমাহলে গিয়ে দেখবে? কেনই বা পুরনো ছবির জন্য পপকর্নের পয়সা খরচ করবে?
দুপুর ১২.২৪
করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বড় শিকার কি বিনোদনের দুনিয়া?
এর মধ্যে একদিন সোহিনীর সঙ্গে টেক্সট মেসেজে কথা হল ‘লকডাউন ডায়েরি’ নিয়ে। বলছিল, ‘দারুণ লাগছে। এটা একটা বই কোরো।’ ওকে বললাম, তোমার ভাল লাগছে জেনে ভাল লাগল। কিন্তু আমার বই আর কে ছাপাবে? এমনিতেও আমি লিখি সেল্ফ এক্সপ্রেশনের জন্য। এত লোক পড়বেন কখনও ভাবিনি। তোমরা পড়ো ভেবেই অভিভূত লাগে।
সোহিনী লিখল, ‘দারুণ! আমায় একটা স্ক্রিপ্ট লিখে দাও। নাটক বানাব। নতুন ফর্মে। আবার যখন সব ঠিক হয়ে যাবে। লোক আসবে হল–এ। দিও।’ একটু থেমে লিখল, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে তো? স্টেজে উঠতে চাই।’
লিখলাম, ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ! লেট্স লিভ উইথ দিস স্পিরিট।
সোহিনীর ভিতরের উচাটনটা বুঝতে পারছিলাম। ওর মতো পাওয়ারফুল অভিনেতা কম দেখেছি। ‘পারমিতার একদিন’ দেখে বাক্যহারা হয়ে গিয়েছিলাম। এত ন্যাচারাল অভিনয় হতে পারে? করতে পারে কেউ? তখন থেকেই সোহিনীর অভিনয়ের ফ্যান। বড় ফ্যান। ওর সঙ্গে আরও একটা অপ্রত্যক্ষ যোগসূত্র আছে। ২০০০ সালে তৎকালীন ই–টিভি’তে ‘জবাব চাই, জবাব দাও’ বলে একটা টক শো করতাম। প্রচুর এপিসোড করেছিলাম। শোয়ের প্রোডিউসার ছিল শিবু। ডিরেক্টর ব্রাত্য। তখন কি আর জানতাম, কালক্রমে শিবু সুপারহিট পরিচালক হবে আর ব্রাত্য নাট্যব্যক্তিত্ব এবং মন্ত্রী!
কাজের চাপে একটা সময় শো–টা আর করতে পারিনি। একেকদিনে পাঁচ থেকে ছ’টা এপিসোড শ্যুট করতে হতো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্যুটিংয়ের পর আবার অফিস গিয়ে দিনের কাজ। দুটোই সাফার করছিল। প্লাস অফিসেও কিছু কিছু লোকজন তৎপর হয়ে উঠেছিলেন। অন্য কাউকে টিভি–তে দেখা গেলে বিখ্যাত–হওন–প্রয়াসী মানুষ আর তার অসূয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। ওটা বেরিয়ে আসে।
আনন্দবাজারে ততদিনে ১০ হাজার বার নাম বেরিয়ে গিয়েছে। সেটা গা–সওয়া হয়ে গিয়েছিল লোকজনের। টক শো শুরু হতে দেখলাম, যাদের সঙ্গে অফিসে পাশাপাশি ইউরিনালে নীরবে হিসি করা ছাড়া কখনও দেখা হয়নি, তারাও করিডরে থামিয়ে বলছে, ‘তোমায় টিভি–তে দেখলাম!’ বুঝলাম, এই লোকগুলোই বলবে, অনিন্দ্য অফিসের কাজে ফাঁকি দিয়ে টিভি–তে টক শো করে বেড়াচ্ছে। ফলে ছেড়ে দিতে হল।
আমি ছাড়ার পর এসে সঞ্চালক হিসেবে শো–টা ধরেছিল সোহিনী। কিন্তু বিদায় নেওয়ার আগে ওর সঙ্গে আলাপ করে আসা হয়নি। যতদূর মনে পড়ে, এখনও মুখোমুখি একবারও কথা হয়নি ওর সঙ্গে। আজকালের ‘সপ্তাহের সাক্ষাৎকার’–এর জন্য ওকে ইন্টারভিউ করেছিলাম। ফোনেই। কিন্তু সেজন্য তো আর কাজের ভক্ত হওয়া আটকায় না।
সোহিনী অ্যান্ড আদার থেসপিয়ান্স উইল বি অন স্টেজ এগেইন। ইনশাআল্লাহ!
দুপুর ২.২৫
অফিসে আসার পথে রাস্তায় একটু বেশি গাড়ি দেখলাম আজ। স্বাভাবিক সময়ের মতো নয়। কিন্তু সংখ্যা বেড়েছে। কোথাও কোথাও পুলিশ গাড়ি থামিয়ে চেকিংও করছে। তবে সরকারি অনুমতি থাকলেও অ্যাপক্যাব নাকি ঠিকঠাক পাওয়া যায়নি। সরকারি বাস চলেছে। কিন্তু টিভি বলছে, তাতে সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না। সত্যি বলতে কী, থাকা বোধহয় সেভাবে সম্ভবও নয়।
গাড়ি চালাতে চালাতেই হঠাৎ মনে হল, এরপর হয়তো এমন একটা সময় আসবে, যখন পুলিশ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে চালক এবং আরোহীদের ‘কোভিড সার্টিফিকেট’ দেখতে চাইবে। নিয়ম হবে, করোনা টেস্ট না করিয়ে রাস্তায় বেরোন যাবে না। সেই টেস্ট ‘নেগেটিভ’ থাকতে হবে। পলিউশন সার্টিফিকেটের মতো। কোভিড ছাড়পত্র না পেলে কাউকে রাস্তায় বেরোতেই দেওয়া হবে না। হয়তো তখন সেই ছাড়পত্র পাওয়ার জন্যেও কোনও চক্র তৈরি হবে। তারা অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট বার করে দেবে। এ দেশে সবই সম্ভব!
বিকেল ৪.৩৫
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা নিয়ে কাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে খিল্লি শুরু হয়েছিল। মিম–টিম বেরিয়ে একাকার। ফেসবুকে কাল একটা স্টেটাস দেখছিলাম, ‘ফুচকা থেকে মোমো আর নান থেকে তন্দুরি— সবই বাড়িতে বানানো হচ্ছে। এর বেশি আত্মনির্ভর হতে গেলে তো এবার বাড়িতে সালোকসংশ্লেষ করতে হবে’। আজ দেখলাম একজন গুনে বার করেছেন, ৩৫ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ২৯ বার ‘আত্মনির্ভরতা’ শব্দটা বলেছেন। এনার্জি আছে বটে লোকজনের!
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজের প্রথম দফার ব্যাখ্যা করলেন। আরও দু’দিন করবেন। তিনি কী বললেন, তা নিয়ে টিভি–র সান্ধ্য শোয়ে তুমুল চাপানউতোর চলবে জানি। শুধু একটা ব্যাপার বেশ ইন্টারেস্টিং লাগল। অর্থমন্ত্রী ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন ইংরেজিতে। তিনি প্রতিটি পয়েন্ট বলার পর তাঁর পাশে বসা একজন সেটা হিন্দিতে অনুবাদ করে দিচ্ছিলেন। এটার কি খুব প্রয়োজন ছিল? কিন্তু কী করা যাবে! রাজনীতিকরা ফুটেজ খাওয়ার সুযোগ পেলে ছাড়েন না। আফটার অল, এর ফলে অর্থমন্ত্রী অন্তত দ্বিগুণ সময় ধরে টিভি স্ক্রিন জুড়ে রইলেন।
সন্ধ্যা ৬.০০
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমেই যেটা চোখে পড়ল— চশমাটা পাল্টেছেন। এখন হাফ রিম ফ্রেম। চমৎকার লাগছে দেখতে। একেবারে প্রথমে রিমলেস পরতেন। তারপর পরা শুরু করলেন রেট্রো ফ্রেম। এখন হাফ রিম। তবে বডি ল্যাঙ্গোয়েজ দেখে এবং কথা শুনে বোঝা গেল, প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজের ঘোষণা নিয়ে বেদম ক্রুদ্ধ হয়ে রয়েছেন। পরিষ্কারই বললেন ‘অশ্বডিম্ব’, ‘বিগ জিরো’, ‘নাথিং’! বললেন, ‘এই ২০ লক্ষ কোটি টাকা আসলে জিরো, জিরো, জিরো জিরো। টোটালটাই বিগ জিরো! রাজ্যের অধিকার কেড়ে নিয়ে লকডাউনে রেখে রাজ্যগুলোকে লকআউট করার চিন্তা।’
আজ দুপুরেও মুখ্যমন্ত্রী পঞ্চায়েত নিয়ে বৈঠক করেছেন। তখনও একবার ব্রিফ করেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিন্হা এবং মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয়ের অফিসার গৌতম সান্যাল। ঘটনাচক্রে, এই পর্যায়ে এই প্রথম গৌতমবাবুকে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে দেখা গেল।
রাত ৯.৩১
অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিলাম সামনের জমিটায় ফনফন করে ঘাস বেড়ে যাচ্ছে। একপাশে একটা একতলা শেড। গেট থেকে সেখানে পৌঁছনোর একটা শুঁড়িপথ আছে। তার দু’পাশে দেওয়ালের মতো ঘাসের প্রাচীর উঠছে। ফটকের কাছে বোধহয় ওয়াচম্যান থাকে। দেখছি সেখানে অন্ধকারে ধিইয়ে উঠছে বিড়ির আগুন। জোনাকির মতো। শেডটা বন্ধ। ওই শুঁড়িপথে কারও পা পড়ে না গত প্রায় দু’মাস। মৃতপ্রায় ঘাসজমিটা পড়ে থাকে প্রাণের অপেক্ষায়।
রাত ১০.৩১
বাড়ি ফিরতে ফিরতে ফিরতে ভাবছিলাম, এই মুখোশবন্দি জীবন আর কতদিন? মনে হচ্ছিল, অনেক হয়েছে! এবার মুখ থেকে অসহায় জোকারের মুখোশ টান মেরে সরিয়ে বেরিয়ে আসুক পৃথিবী! ছিঁড়ে ফেলুক বন্দিত্বের নির্মোক! শেষ হয়ে যাক এই অনন্ত সার্কাস!
আজকের লেখাটা সব মিলিয়ে মিশিয়ে খুব রিফ্রেশিং।
শুধু বাবার জন্য খারাপ লাগল।
প্রণাম জানাবেন।
LikeLike